আজ বৃহস্পতিবার, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

না.গঞ্জে পলিথিন পুড়িয়ে উৎপাদন হচ্ছে অকটেন

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায়  কাজী কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি মেশিন দিয়ে দৈনিক তেরশ কেজি পলিথিন পুড়িয়ে এক হাজার লিটার অকটেন, ডিজেল,পেট্রোল উৎপাদন করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে কাজী কামরুল ইসলামের উদ্ভাবন গ্রীন ডায়মন্ড প্রজেক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, পলিথিন থেকে অকটেন, ডিজেল উৎপাদনের রহস্য সম্পর্কে জানতে তিনি বহু দেশ ভ্রমন করেছেন।

মালয়েশিয়া,সিংগাপুর থেকে শুরু করে থাইল্যান্ড, নেপাল, ভূটান হয়ে ভারত সফরে গিয়েছেন। কিভাবে অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ দিয়ে স্বল্প খরচে মেশিন তৈরী করে অধিক পরিমানে লাভবান হওয়া যায়। সে বিষয়ে কারিগরি শিক্ষা নিয়েছে। দেশে এসেই নিজ উদ্যেগে প্রথমে একটি রি-এক্টোর মেশিন তৈরী করেন। তারপর কুড অয়েল মেশিন। প্রথমে রি-এক্টোর মেশিনে কুড়িয়ে আনা পলিথিন ভর্তি করে নিচের অংশে আগুনের তাপ দিতে হয়। সেখান থেকে পাইপ সংযোগ দিয়ে কুড অয়েল মিশিনে এসে অকটেন,ডিজেল, পেট্রোল জমা হয়। এভাবে অটোমেটিক সিস্টেমে সম্পূর্ন বিপদমুক্ত একটার পর একটা নল দিয়ে অকটেন বের হতে থাকে। এরপর ড্রামে ভরে প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে বাজারে বিক্রি করা হয়।

আবিষ্কারক কামরুল ইসলাম আরো জানায় যে দুটি মেশিন তৈরী করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। যেখানে অনায়াসে দৈনিক তেরশ কেজী পলিথিন পুড়িয়ে একহাজার লিটার অকটেন তৈরী করে চল্লিশ হাজার টাকা আয় করা যায়। এভাবে একদিকে যেমন শ্রমিক খাটিয়ে দেশের বেকারত্ব দূর করা যায় অন্যদিকে দূষন মুক্ত পরিবেশ তৈরী করা সম্ভব। কাজী কামরুল ইসলামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মুশেদপুর উপজেলার পূর্ব নওখন্ডা গ্রামে। বাবার নাম মরহুম কাজী নজরুল ইসলাম, মায়ের নাম শিরিয়া বেগম। লেখাপড়ায় তেমন একটা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারেননি। ১৯৯৭ইং সালে ভোকেশনাল থেকে এস এস সি এবং বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে এইচ এসসি পাশ করেন। তারপর থেকেই কিভাবে নিজের পায়ে দাড়িয়ে সাবলম্বী হওয়া যায় সে বিষয়ে গবেষনা চালিয়েছেন। তারই পরিশ্রমে আজকের তার সাফল্য। কাজী কামরুল ইসলামের দাবী দেশের ৫৬০টি থানায় এভাবে যদি একটি করে পলিথিন পুড়িয়ে অকটেন ডিজেল ও পেট্রোল তৈরীর কারখানা গড়ে তোলা হয় তাহলে আনাচে কানাচে যত্রতত্র পলিথিন পড়ে থাকবেনা। একদিকে যেমন পরিবেশ দূষন মুক্ত হবে অন্যদিকে বেকাররত্ব দূর হবে। পাশাপাশি কারখানা তৈরী করতে সরকারী অনুমতি প্রদান আর্থিক সহায়তা সহ পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের ছাড়পত্র দিতে যেন কোন বাধা না ঘটে সে বিষয়ে সরকারের নিকট তিনি জোড় দাবী জানান।